বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী ইবনে নাফিসের জন্ম ১২১৩ খ্রিস্টাব্দে সিরিয়ার দামেস্ক। তার পুর্ন নাম আলা আদদিন আবু আল হাসান আলি ইবনে আবি হাজামম আল কুরায়শি আল দামেস্কি। ইবনে নাফিস তার কুনিয়াত বা ডাকনাম। তিনি দামেস্ক এর হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে শিক্ষা লাভ করেন।চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি আল-কুরআন,হাদিস,সাহিত্য,দর্শন,ফিকহ এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও সামাজিক বিজ্ঞান সমুহ সম্পর্কেও উচ্চমানের শিক্ষা অর্জন করেন। ১২৩৬ সালে ইবনে নাফিস কায়রো চলে যান এবং কায়রোর আল-নাসিরিয়া এবং আল-মানসুরিয়া হাসপাতালে কাজ করেন। যেখানে তিনি প্রধান চিকিৎসক এর পদ লাভ করেন। কায়রোতে কর্মরত থাকা অবস্থায় ১২৫৮ সালে হালাকু খান বাগদাদ ধ্বংস করেন এবং ইবনে নাফিসের জন্ম স্থান সিরিয়া ও দখল করেন। তৎকালীন জ্ঞান বিজ্ঞানের কেন্দ্রস্থল বাগদাদ ধ্বংস করার সময় হালাকু খান সকল বইপত্র পুড়িয়ে দেন এবং জ্ঞানী বক্তিদের হত্যা করেন। ইবনে নাফিস এই ধ্বংসের হাত থেকে জ্ঞান বিজ্ঞানের অমুল্য সম্পদ রক্ষার জন্য তৎকালীন অন্যান্য মুসলিম মনিষির ন্যায় তার জানা সকল বিষয়কে লিপিবদ্ধ করে বিশ্বকোষ প্রনয়ন করেন।১২৮৮ সালে তিনি কায়রোতে ইন্তেকাল করেন। তিনি কায়রোর সুলতান বাইবার্স এর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছিলেন।
বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী ইবনে নাফিস ছিলেন একই সঙ্গে চিকিৎসক,জীববিজ্ঞানী,সাহিত্যিক,হাদিস বিশারদ এবং ফিকহবিদ। রক্ত-সংবহন ও স্নায়ুতন্ত্র বিষয়ে তার মতামত এখনও গুরুত্বপুর্ন রয়েছে। সার্জারীর ক্ষেত্রেও তিনি নতুন নিয়ম এর আবিস্কার করেন। মনরোগ চিকিৎসা এবং মনোবিজ্ঞান বিষয়ে তিনি ছিলেন একজন পথিকৃত। চোখ এবং আলোক বিজ্ঞান বিষয়েও অনেক মেীলিক তথ্যের আবিস্কার করেছিলেন ইবনে আল নাফিস। চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু ল্যাটিন গ্রন্থের অনুবাদ ও তিনি করেন। খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান সম্পর্কেও ইবনে নাফিস গ্রন্ত রচনা করেছেন। কোন ওষুধ প্রয়োগ না করে খাদ্যাভাস নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে চিকিৎসা করার ব্যাপারে ইবনে নাফিস বিশেষ আগ্রহি ছিলেন এবং কিছূ ক্ষেত্রে এর সফল প্রয়োগ করতে ও তিনি সক্ষম হয়ে ছিলেন। তিনি ওষুধ হিসেবেও মদ ব্যবহার করার বিরোধি ছিলেন এবং মদের অপকারিতা বিষয়েও গবেষনা করেন।
ইবনে নাফিস হাদিস গবেষনার ক্ষেত্রে একটি বিশেষ মতবাদের সৃষ্টি করেন। তিনি হাদিস সহি বা যইফ নির্ধারনের জন্য হাদিসটির ইসনাদ বা পরম্পরা বিবেচনার সাথে হাদিসটির যুক্তিযুক্ততা বিচারের পদ্ধতি অবলম্বনের পক্ষে ছিলেন। তিনি সহি ও যইফ এই দুটি ভাগ থেকে যুক্তির ভিত্তিতে আরো দুই ভাগে বিভক্ত করেন। তার এই শ্রেনী বিভাগ ছিল যেই হাদিস যুক্তি এবং সনদ উভয়এর দিক দিয়ে শক্তিশালি তা অব্যশই সহি,এবং কোন হাদিস যদি যুক্তি বিচারের অগ্রহনীয় হয় তাহলে তা হয়তো বা সহি। অন্যদিকে যইফ হাদিস ও এভাবে যুক্তি বিচারে অবশ্যই যইফ এবং হয়তো বা যইফ ইবনে নাফিস হাদিস শাস্ত্রে এই পদ্ধতি প্রয়োগের সমর্থক ছিলেন। ইবনে নাফিস বিশ্বাস করতেন যে রাসুল সাঃ এর সুন্নত এর সঠিক অনুসরন করতে ব্যর্থতাই মুসলিম সমাজের পতনের কারন। মুসলিম সভ্যতার পতন রোধের উদ্যেশ্যে ইবনে নাফিস তরুনদেরকে সুন্নতে রাসুলুল্লাহ(সাঃ)এর অনুসরনে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেন এবং তিনি সুন্নতে রাসুল এর অন্তর্ভুক্ত আচরন সমূহের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা প্রদান করেন।
বাগাদাদের পতনের পর তিনি রচনা করেন আরবী সাহিত্যের ক্ষেত্রে প্রথম দিকের মেীলিক উপন্যাস "আল রিসালাহ আল কামিল ফি সিরাতিল নবী" । তার নিজের বৈজ্ঞানিক এবং দার্শনিক মতবাদের প্রকাশ করাও এই উপন্যাস রচনার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। তিনি ১২৬৮ থেকে ১২৭৭ সালের মধ্যে এই গ্রন্থ রচনা করেন। এই গ্রন্থটির নামের অর্থ হচ্ছে ”নবীর সিরাত বা জীবন এর উপর কামিলের থিসিস কিংবা পর্যবেক্ষন"গ্রন্থটি ”রিসালায়ে ফাদিল বিন নাতিক” নামেও পরিচিত।
উপন্যাসটির প্রধান চরিত্র কামিল। কামিল একটি মরুদ্বিপে জন্ম নেয়্ এক কিশোর যে পিতা-মাতাহিন অবস্থায় কৈশোরে উপনিত হয়। কামিল একটি স্বশিক্ষিত চরিত্র যার সাথে এই দ্বিপের বাইরের পৃথিবীর কোন পরিচয় নেই। জাহাজডুবির ফলে দ্বিপে আশ্রয় নেয়া নাবিকরা তাকে সভ্য দুনিয়ায় নিয়ে আসে এবং কামিল তার যুক্তিবোধ এবং ইনটুইশন এর দ্বারা এই পৃথিবীর বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে।
ইবনে নাফিসের এই উপন্যাস প্রাথমিক কল্পবিজ্ঞান রচনার একটি অন্যতম উদাহরন। এই উপন্যাসে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সত্য কে তার কাল্পনিক ব্যবহার দ্বারা ব্যখ্যা করা হয়েছে। ইবনে নাফিস তার এই রচনাটিকে বলেছেন ইসলামকে বৈজ্ঞানিক ও যুক্তিগতভাবে রক্ষার চেষ্টা বলে। মানুষের দৈহিক পুনুরুথান এবং কিয়ামতের বিযয়ে তিনি কল্পনার আশ্রয় নিয়ে যে চিত্র উপস্থাপন করেছেন তাই এই রচনা টিকে একটি কল্পবিজ্ঞানের প্রাথমিক উদাহরন এ পরিনত করেছে। যদিও ইবনে নাফিসের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল এই রচনার মাধ্যমে ইসলামের মৈীলিক আদর্শকে তুলে ধরা এবং ইসলামের বিশ্বাস সমুহকে বৈজ্ঞানিক ভাবে ব্যখ্যা করা। ইবনে নাফিস ছিলেন ইসলামি সভ্যতা ও বিজ্ঞানের একজন প্রধান বিশেষজ্ঞ এবং সেই সংগে একজন পরিপুর্ন ইসলাম ধর্ম অনুসারি। পতন এবং বিকৃতির মুখোমুখি ইসলামি সভ্যতা এবং ধর্ম কে রক্ষা এবং বিভ্রান্ত তরুন সমাজকে সঠিক পথের দিশা দিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি বিজ্ঞান বিশেষত শরিরবিজ্ঞান বিষয়ে তিনি ছিলেন প্রথম আধুনিক গবেষেক যার গবেষনা এখনো ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব্ কিছূ ছাড়াও তিনি পৃথিবীর অন্যতম প্রথম এবং প্রথম মুসলিম সাইন্স ফিকশন রচয়িতা হিসেবেও চির স্মরনিয়।
বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী ইবনে নাফিস ছিলেন একই সঙ্গে চিকিৎসক,জীববিজ্ঞানী,সাহিত্যিক,হাদিস বিশারদ এবং ফিকহবিদ। রক্ত-সংবহন ও স্নায়ুতন্ত্র বিষয়ে তার মতামত এখনও গুরুত্বপুর্ন রয়েছে। সার্জারীর ক্ষেত্রেও তিনি নতুন নিয়ম এর আবিস্কার করেন। মনরোগ চিকিৎসা এবং মনোবিজ্ঞান বিষয়ে তিনি ছিলেন একজন পথিকৃত। চোখ এবং আলোক বিজ্ঞান বিষয়েও অনেক মেীলিক তথ্যের আবিস্কার করেছিলেন ইবনে আল নাফিস। চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু ল্যাটিন গ্রন্থের অনুবাদ ও তিনি করেন। খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান সম্পর্কেও ইবনে নাফিস গ্রন্ত রচনা করেছেন। কোন ওষুধ প্রয়োগ না করে খাদ্যাভাস নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে চিকিৎসা করার ব্যাপারে ইবনে নাফিস বিশেষ আগ্রহি ছিলেন এবং কিছূ ক্ষেত্রে এর সফল প্রয়োগ করতে ও তিনি সক্ষম হয়ে ছিলেন। তিনি ওষুধ হিসেবেও মদ ব্যবহার করার বিরোধি ছিলেন এবং মদের অপকারিতা বিষয়েও গবেষনা করেন।
ইবনে নাফিস হাদিস গবেষনার ক্ষেত্রে একটি বিশেষ মতবাদের সৃষ্টি করেন। তিনি হাদিস সহি বা যইফ নির্ধারনের জন্য হাদিসটির ইসনাদ বা পরম্পরা বিবেচনার সাথে হাদিসটির যুক্তিযুক্ততা বিচারের পদ্ধতি অবলম্বনের পক্ষে ছিলেন। তিনি সহি ও যইফ এই দুটি ভাগ থেকে যুক্তির ভিত্তিতে আরো দুই ভাগে বিভক্ত করেন। তার এই শ্রেনী বিভাগ ছিল যেই হাদিস যুক্তি এবং সনদ উভয়এর দিক দিয়ে শক্তিশালি তা অব্যশই সহি,এবং কোন হাদিস যদি যুক্তি বিচারের অগ্রহনীয় হয় তাহলে তা হয়তো বা সহি। অন্যদিকে যইফ হাদিস ও এভাবে যুক্তি বিচারে অবশ্যই যইফ এবং হয়তো বা যইফ ইবনে নাফিস হাদিস শাস্ত্রে এই পদ্ধতি প্রয়োগের সমর্থক ছিলেন। ইবনে নাফিস বিশ্বাস করতেন যে রাসুল সাঃ এর সুন্নত এর সঠিক অনুসরন করতে ব্যর্থতাই মুসলিম সমাজের পতনের কারন। মুসলিম সভ্যতার পতন রোধের উদ্যেশ্যে ইবনে নাফিস তরুনদেরকে সুন্নতে রাসুলুল্লাহ(সাঃ)এর অনুসরনে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেন এবং তিনি সুন্নতে রাসুল এর অন্তর্ভুক্ত আচরন সমূহের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা প্রদান করেন।
বাগাদাদের পতনের পর তিনি রচনা করেন আরবী সাহিত্যের ক্ষেত্রে প্রথম দিকের মেীলিক উপন্যাস "আল রিসালাহ আল কামিল ফি সিরাতিল নবী" । তার নিজের বৈজ্ঞানিক এবং দার্শনিক মতবাদের প্রকাশ করাও এই উপন্যাস রচনার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। তিনি ১২৬৮ থেকে ১২৭৭ সালের মধ্যে এই গ্রন্থ রচনা করেন। এই গ্রন্থটির নামের অর্থ হচ্ছে ”নবীর সিরাত বা জীবন এর উপর কামিলের থিসিস কিংবা পর্যবেক্ষন"গ্রন্থটি ”রিসালায়ে ফাদিল বিন নাতিক” নামেও পরিচিত।
উপন্যাসটির প্রধান চরিত্র কামিল। কামিল একটি মরুদ্বিপে জন্ম নেয়্ এক কিশোর যে পিতা-মাতাহিন অবস্থায় কৈশোরে উপনিত হয়। কামিল একটি স্বশিক্ষিত চরিত্র যার সাথে এই দ্বিপের বাইরের পৃথিবীর কোন পরিচয় নেই। জাহাজডুবির ফলে দ্বিপে আশ্রয় নেয়া নাবিকরা তাকে সভ্য দুনিয়ায় নিয়ে আসে এবং কামিল তার যুক্তিবোধ এবং ইনটুইশন এর দ্বারা এই পৃথিবীর বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে।
ইবনে নাফিসের এই উপন্যাস প্রাথমিক কল্পবিজ্ঞান রচনার একটি অন্যতম উদাহরন। এই উপন্যাসে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সত্য কে তার কাল্পনিক ব্যবহার দ্বারা ব্যখ্যা করা হয়েছে। ইবনে নাফিস তার এই রচনাটিকে বলেছেন ইসলামকে বৈজ্ঞানিক ও যুক্তিগতভাবে রক্ষার চেষ্টা বলে। মানুষের দৈহিক পুনুরুথান এবং কিয়ামতের বিযয়ে তিনি কল্পনার আশ্রয় নিয়ে যে চিত্র উপস্থাপন করেছেন তাই এই রচনা টিকে একটি কল্পবিজ্ঞানের প্রাথমিক উদাহরন এ পরিনত করেছে। যদিও ইবনে নাফিসের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল এই রচনার মাধ্যমে ইসলামের মৈীলিক আদর্শকে তুলে ধরা এবং ইসলামের বিশ্বাস সমুহকে বৈজ্ঞানিক ভাবে ব্যখ্যা করা। ইবনে নাফিস ছিলেন ইসলামি সভ্যতা ও বিজ্ঞানের একজন প্রধান বিশেষজ্ঞ এবং সেই সংগে একজন পরিপুর্ন ইসলাম ধর্ম অনুসারি। পতন এবং বিকৃতির মুখোমুখি ইসলামি সভ্যতা এবং ধর্ম কে রক্ষা এবং বিভ্রান্ত তরুন সমাজকে সঠিক পথের দিশা দিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি বিজ্ঞান বিশেষত শরিরবিজ্ঞান বিষয়ে তিনি ছিলেন প্রথম আধুনিক গবেষেক যার গবেষনা এখনো ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব্ কিছূ ছাড়াও তিনি পৃথিবীর অন্যতম প্রথম এবং প্রথম মুসলিম সাইন্স ফিকশন রচয়িতা হিসেবেও চির স্মরনিয়।
Where is the reference? Is there any copy of this sci-fi book in Arabic or English version available at 2016?
উত্তরমুছুন