বুধবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১২

হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা এসেছিল আবার

হ্যামলিনের সেই বাঁশিওয়ালা গতকাল আবার এসেছিল।পার্থক্য শুধু তার হাতে আগে ছিল বাঁশি আর এখন মোবাইল ফোন। সেবার তার কাজের পক্ষে একটা যুক্তি ছিল অন্ততপক্ষে।হ্যামলিনের মেয়র চুক্তি মোতাবেক তার প্রাপ্য দিতে চাননি।কিন্তু এবার কোন মেয়রের দোষে সে এতগুলি কচি প্রান ছিনিয়ে নিয়ে গেল তা হয়তোবা আর জানা যাবেনা।
এই কিশোরেরা স্ব-ইচ্ছায় এই মিনি ট্রাকে চড়ে তাদের স্কুলের প্রাইমারি সেকশনের খেলা দেথতে গিয়েছিল কিনা তা জানা যাবে কি? পিকনিক এর মত এই ভ্রমন এ কিশোরদের অনিচ্ছা থাকার কথা নয়। হয়তোবা তাদের ছোটভাইদের মধ্যে তারা দেখতে গিয়েছিল ভবিষ্যতের কোন মেসি কিংবা ম্যারাডোনা কে। কিন্তু ফিরে আসার সময় হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা তার মোবাইল ফোন বাজিয়ে তাদের কে নিয়ে গেল অন্য জগতে।তবে তার আচরনের একটা পরিবর্তন হয়েছে এবার। আগেরবার সে সব বাচ্চাদের নিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এবার তাদের প্রানগুলি নিয়ে গিযে শুধূ নিস্প্রান দেহটা ফিরিয়ে ধিয়েছে।পৃথিবীর সবচেয়ে ভারি বোঝা করে পিতা-মাতার কাঁধে। কেন হঠাত করে তারা এই প্রান নিয়ে যাওয়ার শখ হলো। আমরা হয়তোবা আর কোনদিন জানতে পারবোনা।

প্রতিবছরের মতই এবার ও স্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট হচ্ছে। প্রত্যেকটি উপজেলা-থানা শিক্ষা অফিস থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে স্কুলের ছাত্র-ছ্রাত্রি উভয়ের ফুটবল টিম গ্রঠন করে খেলার জন্য নিয়ে যেতে। সেই সঙ্গে বাকি শিক্ষার্থিদেরও দর্শক বা সমর্থক হিসেবে নিয়ে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোন পরিকল্পনা বা অর্থ বরাদ্দ নাই। নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সেই স্কুল কর্তৃপক্ষের। সল্প বেতনের যে শিক্ষকরা প্রায়ই ব্যার্থ হন নিজের সন্তানদের শিক্ষা দিতে সেখানে তাদের কে নিজর পয়সা খরচ করে এই কাজ করতে বলা হয়।উপজেলা,জেলা অফিসের চেয়ারে বসে থাকা আমলা শ্রেনীর শিক্ষা অফিসার এই নির্দেশগুলিকে তার ক্ষমতা দেখানোর উপায় হিসেবেই দেখেন।অন্য অফিসারদের তুলনায় না হলে তার ক্ষমতাকম মনে হবে যে!
হয়তোবা এই ঘটনার তদন্ত হবে। ট্রাক ড্রাইভারের সার্থে দায়িত্বহীনতার অভিযোগে চাকুরি হারাবেন স্কুলটির নিরিহ শিক্ষকরা। কিন্তু আড়ালে রয়ে যাবেন সেই ক্ষমতাধর কর্মকর্তরা যারা কোন পরিকল্পনা ব্যাতিরিকে উদ্ধট আদেশ–নির্দেশ দিয়ে যান।

নিজেকে অপরাধী মনে হয় যে মোবাইল ফোনের কারনে এই দুর্ঘটনা আমি সেই প্রযুক্তির সাথেই যুক্ত। কোম্পানীগুলি বিজ্ঞাপনের জন্য যে পরিমান ব্যায় করে তার একটি অংশ কি ব্যায় করতে পারতোনা মোবাইল ফোন ব্যবহার বিধির উপর জনসচেতনতায়। শুধু নারীদের নৃত্যই কেন বিজ্ঞাপনের বিষয়।

এই শহিদদের জন্য আমরা এখন শুধূ মাগফিরাতই কামনা করে যাব আর ভুলে যাব দুদিন পরই। শুধু ভুলতে পারবেননা সেই পিতা নিজের কাঁধে যিনি বহন করেছেন সন্তানের লাশ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন